আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা-আমাশয় হলে যেসব খাবার খাওয়া যাবেনা
দাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা- দাদ হলে আমাদের কি কি করা উচিতআমাশয় একটি ছোঁয়াচে রোগ। অন্ত্রের সংক্রমনের ফলে আমাশয় রোগ হয়। আমাশয় ঘরোয়া
উপায়ে সারিয়ে তোলা যায়।
আমরা আমাদের নিচের আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা-আমাশয় হলে যেসব খাবার খাওয়া যাবেনা আর্টিকেলে এসব নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনারা যদি এসব সম্পর্কে জানতে
চান তাহলে নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।
আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা এবং আমাশয় হলে কি কি ওষুধ খেতে হবে। তা নিচে আলোচনা
করা হয়েছে। আপনারা যারা এসব সম্পর্কে জানতে চান। তারা আমার নিচের আর্টিকেল করে
পড়ে আসতে পারেন।
ভুমিকা
পানি আমাশয় ছড়ায়। আমাশয় হওয়ার কারণে ডিহাইড্রেশন হয়। যার ফলে শরীর থেকে অনেক
পানি বের হয়ে যায়। ফলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। বাসি খাবারের মাধ্যমেও আমাশয়
ছড়ায়। আমাশয় একটি ছোঁয়াচে রোগ। এটি মানুষ থেকে পশুপাখির মধ্যেও ছড়িয়ে যেতে
পারে। শরীরে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয় যেমন অনেক বেশি জ্বর,পেট ব্যথা, এবং বমির
ভাব।
আমাশয় এক সপ্তাহের মত স্থায়ী হয়। আমাশয় হলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হয়
কারণ অপরিষ্কার থেকেও আমাশয় ছড়িয়ে যেতে পারে। আমরা অনেকেই জানিনা আমাশয় হলে কি
করতে হয়। কোন খাবার খেতে হয়, কোন খাবার থেকে বিরত থাকতে হয়। আমাশয় হলে কোন
খাবার খাওয়া যাবে কোন খাবার খাওয়া যাবেনা এসব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আমাশয় রোগের ঘরোয়া উপায়
- অর্জুনের ছালঃ গাছ থেকে অর্জুনের ছাল নিয়ে এসে ছাল ছাড়িয়ে বেটে রস করে যদি খাওয়া যায় তাহলে আমাশয় ভালো হয়।
- ডাবের পানিঃ আমাশয় হলে আমাদের শরীর পানি শূন্যতার শিকার হয় যার কারণে আমরা যদি ডাব খাই সে পানি শূন্যতার অভাব পূরণ হয় এবং শরীর সুস্থ হয় তাই আমাশয় হলে আমাদের নিয়মিত ডাব খাওয়া উচিত।
- পেঁপের ঝোলঃ আমশয় হলে পেট ব্যথা করে, পেটে জ্বালাপোড়া করে তাই তেল মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে যাওয়া উচিত তখন আমরা পেঁপে যেহেতু ঠান্ডা খাবার তাই পেপের ঝোল খেতে পারি।
- গুড়ঃগুড় খুবই উপকারী আমাদের শরীরের জন্য। আখের গুড় শরীরের জন্য খুবই ভালো। নিয়মিত আমাদের আখের গুড় খাওয়া উচিত যদি আমাশয় থাকে।
আমাশয় রোগীর খাদ্য তালিকা
- ডিমঃ আমাশয় হলে ডিম খাওয়া উচিত। আমাশয় রোগীর জন্য ডিম খুব উপকারী ভূমিকা পালন করে। ডিম অন্ত্রের গতি ভারসাম্য বজায় রাখে তাই ডিম খাওয়া উচিত।
- কলাঃ কলা আমাশয় এর জন্য খুবই ভালো। অন্ত্রের সংক্রমণকে কলা অনেকটা প্রশমিতা করে ফেলে। আমাদের কলা খাওয়া উচিত বিশেষ করে কাঁচা কলা খাওয়া উচিত। কাঁচা কলা আমাশয়ের জন্য খুবই উপকারী।
- আলুঃ আলুতে যেহেতু পটাশিয়াম থাকে। তাই এটি হজমের কাজ ভালো করে এসব কারণে আলু খাওয়া উচিত। বিশেষ করে সেদ্ধ আলু বেশি উপকারী এর জন্য।
- লেবুর রস ও সবজিঃ আমাশয়ের জন্য লেবুর রস,সবজি খুবই উপকারী ভূমিকা পালন করে। লেবুর রসে থাকে আন্টি ইনফ্লেমেটরি। যা পিএইচ এর ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই লেবুর রস খাওয়া উচিত এবং সবজির বিভিন্ন ধরনের সুপ খাওয়া উচিত।
আমাশয় হলে যেসব খাবার খাওয়া যাবেনা
- অতিরিক্ত তেল বা মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা।
- ভাজাপোড়া,বাইরের ফাস্টফুট জাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা।
- বাসি খাবার একটু ও খাওয়া যাবেনা।
- দুধ জাতীয় কোন জিনিস ভুল করেও মুখে নেওয়া যাবে না।
- চর্বি জাতীয় খাবারও কোন ভাবে খাওয়া যাবেনা।
- অতিরিক্ত তেল বা মসলা দিয়ে রান্না করা খাবার খাওয়া যাবে না।
- যেসব খাবার খেলে এসিডিটির প্রবলেম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেসব খাবারও এড়িয়ে চলতে হবে।
আমাশয় হলে ডিম খাওয়া যাবে কি
আমরা অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বের ভুগি যে ডিম খাওয়া যাবে কিনা। ডিমে অনেক প্রোটিন
থাকে যা অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং আমাদের দীর্ঘক্ষণ শরীর সুস্থ রাখে। তবে
আমাশয় হলে ডিম না খাওয়াই উচিত। যখন আমার শরীর ভালো হয়ে যাবে। তখন থেকে ডিম
খাওয়া উচিত। তবে ডিম খাওয়ার সময় আমাদের অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে দিম যেন সেদ্ধ
হয়।
আমাশয় হলে যা করতে হবে
আমাসয় হলে কি খাবার খেতে হবে আলোচনা করেছি। এখন আমরা আলোচনা করব আমাশয় হলে
আমাদের যা করণীয় এ সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা এখনো
জানে না আমাশয় হলে কি করনীয়। আমরা কি করব তার আগে আমাদের জানা উচিত আমাদের কোন
আমাশয় অ্যাটাক করেছে আমাশয় মূলত দুই প্রকার
১। আমিবিক আমাশয়২। বেসেলারি আমাশয়
- অ্যামিবিক আমাসয়ঃ আমিবার কারণে আমিবিক আমাশয় হয়।
- বেসিলারি আমাশয়ঃ এর মূল কারণ বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সিগেলা সালমোনেলা ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়ার কারণে বেসিলারে আমাশয় হয়।
আমিবিক আমাসয় চেনার উপায়
- পেট ব্যথা করে।
- মাঝে মাঝে নাভির চারপাশ দিয়ে কামড় দিয়ে ওঠে।
- মলত্যাগ করতে গেলে ঠিকমতো মলত্যাগ করতে পারে না।
- মলের সাথে রক্ত বের হয় মাঝে মাঝে কিন্তু সব সময় নয়। তাজা রক্ত বের হয়।
- মলত্যাগের সময় যন্ত্রণা অনুভব হয়।
- বমি ভাব অনুভব হয়।
বাসিলারি আমাসয় চেনার উপায়।
বেসেলারি আমাশয় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া আক্রমণে হয়ে থাকে। সিগেলা সাল মনেলা
ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের কারণে ব্যাসিলারি আমাসয় হয়।
- অনেক বেশি জ্বর হয়।
- তীব্র মাত্রার পেট ব্যথা শুরু হয়।
- মলত্যাগের সময় রক্ত বের হয় যা ব্যাচেলারী আমাশয় চেনার মূল কারণ।
মূলত দূষিত পানি দ্বারা এই আমাশয় ছড়িয়ে পড়ে। আমাশয় একটি পীড়াদায়ক। আমরা
যদি কিছু এলোপ্যাথিক ওষুধের নাম জানি তাহলে সহজেই সেবন করে শরীরকে সুস্থ করতে
পারি কারণ আমাসয় হলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়।
আমাসয় এর বিভিন্ন ওষুধ এর তালিকা
- Syproflaxacin tablet
- Safetriaxon tablet
- Pivmessilinam tablet
- Basilext tablet
- Pivicil tablet
- Flagyi tablet
- Alexid tablet
- Emcil tablet
- Lexipen tablet
- Zox tablet
- Relaxid tablet
- Pinam
আমাশয় সারাতে থানকুনি পাতা
থানকুনি পাতা সব জায়গাতেই পাওয়া যায়। থানকুনি পাতা চেনে না এমন কোন লোক নেই
।বাজারে হর হামেশাই পাওয়া যায়। থানকুনি পাতাকে আমরা সবজি হিসেবেই চিনে থাকি এবং
সবজি হিসেবেই খাই। কিন্তু এই ডানকুনি পাতার যে কত গুণ রয়েছে তা আমরা জানি না।
আমাশয় সারাতে এই থানকুনি পাতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই পাতা
বাড়ির আশেপাশে যে কোন পরিবেশে হয়ে থাকে।
থানকুনি পাতার রয়েছে বহুগুণ। প্রাপ্তবয়স্কদের সাথে সাথে ছোট বাচ্চাদের জন্য
থানকুনি পাতা খুবই উপকারি। থানকুনি পাতা খুবই সাহায্য করে। যদি আমাশয় হয় তাহলে
আমরা নিয়মিত প্রতিদিন সকালে খালি পেটে থানকুনি পাতা খেতে পারে আবার থানকুনি পাতা
বেটে নিয়ে রসটাও খেতে পারি। থানকুনি পাতার সাথে আবার হলুদ মিশিয়ে খেতে পারি।
আমাশয় সারাতে বেত গাছ
বহু জায়গায় বেত গাছ হতে দেখা যায়। বেত গাছের ফল মূলত আমাসয় সারাতে সাহায্য
করে। যাদের আমাশয় অনেকদিন ধরে রয়েছে তারা এই বেত গাছের যে শাস থাকে তা নিয়মিত
খেতে পারেন তাতে করে আমাশয় পুরোপুরি ভালো হয়ে যাবে। আমাসয় ছাড়াতে বেত গাছের
ভূমিকা অনেক। বেত ফলের মধ্যে রয়েছে থায়ামিন,পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম উপাদান যা
আমাশয় সারাতে সাহায্য করে।
আমাশয় সারাতে আদার ভুমিকা বহুগুন
আদা নানাবিধ অসুখ বিসুখে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আদা খেলে পুরাতন আমাশয় ভালো হয়ে
যায়। আদা কে প্রথমে গুড়া করে নিতে হবে তারপরে সেটা রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে
হবে। আদার গুড়া হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে তাহলে আমাসয় ভালো হয়ে যাবে।
শেষ কথা
আমাশয় একটা খুবই পরিচিত রোগ যা বিভিন্ন কারণে ছড়িয়ে যেতে পারে। এটা মূলত একটা
ছোঁয়াচে রোগ। ঘরোয়া কি কি উপায়ে আমরা আমাশয় এর থেকে মুক্তি পেতে পারি তা
আলোচনা করেছি এ আর্টিকেলে। আপনাদের যদি আমার আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগে তাহলে
অবশ্যই আপনাদের মতামত কমেন্টে জানাবেন এবংআমাদের পোস্ট টি শেয়ার করবেন।
কমেন্টের মাধ্যমে আপনাদের মতামত জানান
comment url