দাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা- দাদ হলে আমাদের কি কি করা উচিত
ছোট বেডরুম সাজিয়ে রাখার বিভিন্ন নিয়মদাদ রোগ হলে অনেক কষ্ট হয় আমাদের। কেননা এটি হলে শরীরের একটা স্থানে অনেক
চুলকানি হয়। দাদ হলে খুব দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আপনারা যারা দাদ
রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা- দাদ হলে আমাদের কি কি করা উচিত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
চান। তারা আমাদের নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।
আপনারা যারা দাদ হলে কি কি খাবার খাওয়া যেতে পারে সেটি সম্পর্কেও জানতে চান।
তাহলে তারা আমাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে বিস্তারিত পরে আসতে পারেন।
ভূমিকা
দাদ একটি খুবই পরিচিত রোগ। দাদ রোগের চিকিৎসা করলে খুব দ্রুত সেরে যায়। যে কোন
স্থানে দাগ রোগ হতে পারে। । দাদ রোগ হলে এর ঘরোয়া কিভাবে চিকিৎসা করা যায় এবং
এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে খুব দ্রুত সেরে যায়। তা নিচে আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আমার নিজের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।
যেসব লক্ষণ দেখে আমরা বুঝতে পারি যে দাদ হয়েছে
- এখানে দাদ হয় সেই অংশটা ফুলে ওঠে এবং চারপাশে ছোট ছোট ব্রাশের মতো উঠে। লাল হয়ে যায় ব্যথা করে এবং চুলকানোর মতো ভাব হয়। এটা দেখতে গোল গোল রাশির মত।যেখানে দাদ হয় সেখানে লাল হয়ে ওঠে। যেখানে দাদ হয় সেই জায়গাটা খসখসে হয়ে যায়। চামড়া উঠে যায়। শরীরে সব অংশে দাদ হয় তবে কিছু অংশে বেশি দাদ হয় তা নিচে আলোচনা করা হলো। মাথার টাকে,বিশেষ করে দাঁত একটু বেশিই হয়ে থাকে দাদ শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায়।
- মাথায় দাদ হলে সেই অংশ থেকে চুল উঠে যায়। জায়গা তৈরি হয় ফাঁকা হয়ে যায়। রাত বেশি হলে সে ফাঁকা জায়গার পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। রাত হয় এবং মাথা সেই স্থানে চুলকায় এবং অনেক বেশি গোল গোল রাস হয়। যা লাল হয়ে ওঠে প্রাপ্তবয়স্কদের একটু কমই মাথায় দাদ হয় বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের মাথায় দাদ বেশি হয়।
- হাত পায়ের আঙ্গুলে বিশেষ করে হাত পায়ের আঙ্গুলে দাদ বেশি দেখা যায়। একবার আঙ্গুলে যখন দাদ হয়। তখন সেই জায়গা থেকে চামড়া আস্তে আস্তে উঠতে থাকে এবং খসখসে হয়ে যায়। শুষ্ক হয়ে যায় চামরা শুকিয়ে ওঠে। আঙ্গুলের ফাঁকে অনেক চুলকায় এবং লাল লাল হয়ে উঠে।
- দাদ রোগের ঘরোয়া আলোচনা করা হলো
- তাই দাদ আক্রান্ত স্থানে যদি আমরা হাত দেই। তাহলে আমরা সাথে সাথে হাফ হ্যান্ড ওয়াস দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিব। যাতে জীবাণু আর ছড়িয়ে যেতে না পারে। দাঁদ যেখানে হয়েছে আমরা সেই জায়গাটা সব সময় শুকনা রাখার চেষ্টা করব এবং আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহৃত জিনিস পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করা। এবং সব সময় শুকিয়ে রাখবো।
- দাদ হলে আমরা যা যা করবো না
পরিবারের কোনো সদস্যের যদি দাদ রোগ হয় তাহলে তার ব্যবহৃত কোন জিনিস ব্যবহার করব
না। সে যে জিনিসগুলো ব্যবহার করবে তা ধুয়ে শুকিয়ে রাখবো। একই চিরুনি একই জিনিস
ব্যবহার করব ।এটা ছোঁয়াচে তাই একটু দূরে থাকার চেষ্টা করব। দাদ হয় ফাঙ্গাল
ইনফেকশনের কারনে।
ঘরোয়া উপায়ে দাদ সারানোর উপায়
- নিম পাতাঃ নিম পাতা খুব তেঁতো একটা পাতা। নিমপাতা জীবাণু নষ্ট করে তাই আমাদের যেখানে দাদ হয় সেখানে যদি নিম পাতা দেখতে লাগিয়ে রাখা যায়। তাহলে সেখানকার সকল জীবানু বিনষ্ট হয়ে যায়। খুব দ্রুত দাঁত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- নারিকেলের তেলঃ নারিকেলের তেলে আন্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা জীবাণু নষ্ট করতে সাহায্য করে। দাদ হয়েছে এমন জায়গায় যদি নারিকেলের তেল লাগানো হয়। তাহলে উক্ত জায়গায় দাদ এর যে চুলকানি ক্রমশ তা কমতে থাকে। যেহেতু ফাঙ্গাল ইনফেকশনের কারণেই দাদ রোগটা হয় আর নারিকেলের তেল ফাংগাল ইনফেকশনের বিরুদ্ধে কাজ করে। তাই দাদ রোগের জন্য নারিকেলের তেল খুবই উপকারী।
- অ্যালোভেরাঃ অ্যালোভেরা তে রয়েছে বহু গুনাগুন। দাদ রোগ হলে এই জেল ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। অ্যালোভেরাতে রয়েছে বিভিন্ন উপাদান যা এই রোগ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। এটা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের বিরুদ্ধে কাজ করে।
- হলুদঃ হলুদ অ্যান্টিসেপটিক গুন সম্পন্ন উপাদান যা ব্যবহার করে দাদ রোগ ভালো করা যায়। যেখানে দাদ হয়েছে সেখানে যদি হলুদ বাটা রাখা যায় নিয়মিত একইভাবে। তাহলে অল্প কিছুদিন এর মধ্যে দাদ ভালো হয়ে যাবে।
- রসুনঃ রসুন খুব ভালো অ্যান্টিসেপটিক এর কাজ করে। যেখানে দাদ হয়েছে সেখানে যদি একটু রসুন বাটে লাগিয়ে রাখা যায়। তাহলে দাদ খুব সহজেই সারিয়ে ওঠে। দাদ হলে আমরা অনেকেই বুঝি না আসলে কি করা উচিত কি করা উচিত না।
দাদ হলে আমাদের কি কি করা উচিত
- যেখানে দাদ হয়েছে সেই জায়গাটা আমাদের নিয়মিত গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে দিয়ে মুছে সেটাকে শুকিয়ে রাখতে হবে।
- দাদ হয়েছে সেই জায়গা কখনোই ভিজা রাখা যাবে না।
- যেখানে দাদ হয়েছে সেটা তো ক্ষতস্থান হয়ে গেছে সেই ক্ষতস্থানে কখনোই সাবান বা শ্যাম্পু জাতীয় কোন জিনিসই ব্যবহার করা যাবে না।
- দাদ হলে শরীরে আমাদের ঢিলেঢালা কাপড়চোপড় পরতে হবে।
- খুব টাইট ফিটিং কাপড় পড়া যাবে না। তাতে দাদ আরো বেশি হয়ে যা ।
- ক্ষতস্থানটি আরো বেড়ে যেতে পারে। তাই পানি ব্যবহার বেশিক্ষণ করা যাবেনা।
- নখ লাগানো যাবে না। কারণ নখের দ্বারা ফাঙ্গাস ভাইরাস টি ছড়িয়ে যেতে পারে।
- সমস্যা হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
- এমনি ভুলভাল মানুষের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করা যাবে না তাতে ক্ষতি হতে পারে।
দাদ হলে কি কি খাবার খাওয়া যেতে পারে
দাদ হলে যেসব খাওয়া উচিত। যা আমরা অনেকেই বুঝিনা আসলে কি খাবার খাওয়া উচিত।
কিন্তু আমাদের জানা উচিত দাদ হলে যে যেসব খাবার খেলে দ্রুত দাঁত ভালো হবে সেসব
খাবারই খাওয়া উচিত। নিচে এসব নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
- আন্টিফাঙ্গাল জাতীয় খাবার রাখতে হবে খাবার তালিকায়।
- আমাদের খাবারের তালিকা অবশ্যই দাদ রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। যেমন আদা রসুন এসব খাবার বেশি রাখতে পারি যাতে দাদ রোগ দ্রুত সেরে ওঠে।
- শাকসবজি এবং ফলমূল খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। তাই আমাদের খাদ্য তালিকায় সবসময় শাকসবজি রাখা উচিত।
- আমরা আমাদের খাদ্য তালিকায় চর্বি ছাড়া প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখতে পারি।
- মাছ মাংস ইত্যাদি সব খাবার শরীরে অ্যামিনো অ্যাসিড সরবরাহ করে। তাই এসব খাবার রাখতে পারি।
- গোটা শস্য জাতীয় খাবার আমরা আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। মিহি শস্য জাতীয় খাবারের থেকে গোটা সুস্থ জাতীয় খাবার বেশি উপকারী
দাদ হলে যেসব খাবার খাওয়া উচিত না
- দাদ হলে সব খাবার খাওয়া উচিত না। দুগ্ধ জাতীয় খাবার দাদ হলে এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ তখন যদি দুগ্ধ জাতীয় খাবার খেলে দাদের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়।
- অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকায় এই সময় ভালো। কারণ আলকোহল খেলে আমাদের শরীরের যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সিস্টেম নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে বিভিন্ন ভাইরাস আমাদের দেহকে সংক্রমণ করতে পারে। এজন্য অ্যালকোহলকে এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
- তেল বা চর্বিযুক্ত খাবার অতিরিক্ত তেল বা চর্বিযুক্ত বা মসলাযুক্ত খাবার খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। যার কারণে শরীর বিভিন্ন ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে পারে না। আর তাই এসব খাবার পরিহার করা উচিত।
- ভাজা পোড়া জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে তেল থাকে যার ফলে ইমুয়িন সিস্টেমের উপর খুব প্রভাব ফেলে তাই না খাওয়াই ভালো
- চিনি জাতীয় খাবার না খাওয়া ভালো।
দাদের জন্য কি লেবু খুব উপকারী
লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি যা দাদের জন্য খুবই প্রয়োজন। এটা খেলে রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ে এবং লেবুতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দাদ রোগ সারাতে খুব সাহায্য
করে। লেবুর তেল দাদ রোগের জন্য খুবই উপকারী। লেবু দিয়ে যে তেল বানানো হয় তা দাদ
সারাতে খুব সাহায্য করে। লেবুর তেলে থাকে আন্টি ফাংগাল বৈশিষ্ট্য যা চুলকানির
প্রশমন করে স্থানে দাদ হয়।
সেই জায়গাগুলো লেবুর রস লাগায় তাহলে সে জায়গাটার চুলকানির পরিমাণ অনেক কমে
যায় এবং তা শুকিয়ে আসে তাদের যদিও লেবু খুব উপকারী দাদ রোগের জন্য তারপরেও
আমাদের বেশি পরিমাণ লেবু লাগানো যাবে না বা খাওয়া যাবে না তার জন্য অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
শেষ কথা
আপনাদের যদি আমাদের উপরের আলোচনাটি ভাল লেগে থাকে। তাহলে ওয়েবসাইটে গিয়ে আরও
আর্টিকেল পরে আসতে পারেন। আপনাদের মতামত কমেন্টের মাধ্যমেও আমাদের জানাতে পারেন।
কমেন্টের মাধ্যমে আপনাদের মতামত জানান
comment url